স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন?। হতাশার কারণ হতে পারে আমি কোন কিছু মনে রাখতে পারছিনা।আপনি ভাবছেন আগে তো আমার এসব সমস্যা ছিল না। আগে অনেক কঠিন কিছু আপনি খুব সহজে মনে রাখতে পারতেন। কিন্তু এখন অনেক সহজ কিছু মনে রাখতে পারছেন না। কিন্তু এমনটা কেন হচ্ছে?।
আপনি বাইরে বের হওয়ার সময় আপনার মানিব্যাগটা নিতে ভুলে গেছেন অথবা আপনার বাইকের চাবিটা কোথায় রাখছেন কিছুতেই মনে করতে পারছেন না। প্রয়োজনের সময় কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না। আপনি অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন যে আপনার স্মৃতিশক্তি কমে যাচ্ছে।
তাছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি সাধারণ সমস্যা তারা তাদের পড়াশোনা কিছুই মনে রাখতে পারছেন না। এখন যে বিষয়গুলো বললাম এই সমস্যা কমবেশি সবারই হয়ে থাকে। এরকম ভুলে যাওয়া সমস্যা কারো কারো ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এটা অনেক বেশি অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে।
তবে প্রায় সকলেই চায় তাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীরা চায় তাদের স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায় জানতে। আপনাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে আজকে একটি ছোট্ট টিপস দিব। তবে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে আপনাকে কোন ঔষধ খেতে বলবো না। টিপসটি পেতে সম্পূর্ণ পোস্টটি ভালোভাবে পড়বেন।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির আয়ুর্বেদিক ঔষধ
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে আয়ুর্বেদিক ঔষধ খুব চমৎকার কাজ করে। কিছু প্রাকৃতিক খাবার নিয়মিত খাওয়ার ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
- কাঠবাদাম: মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাঠবাদাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। কাঠবাদাম সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে দুধ কিংবা মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে অনেক উপকারে আসে।
- আমলকি: আমলকির রস কিংবা আস্ত আমলকি নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
- মাছের তেল: মাছের তেলে প্রচুর পরিমাণ প্রাণীর ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকার কারণে এটি মস্তিষ্কের কোষের পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
- দারুচিনি: দারুচিনি আমরা মসলা হিসেবে ব্যবহার করলেও এটি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে অত্যন্ত ফলপ্রসূ। প্রতিদিন মধুর সাথে আধা চামচ দারুচিনির গুঁড়া মিশিয়ে খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
- ঘি: ঘি মস্তিষ্কের ক্ষমতা, বুদ্ধিবৃদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে শক্তিশালী ভাবে কাজ করে।
কি খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে?
- কফিতে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সাইড এবং ক্যাফেইন থাকার কারণে এটি মস্তিষ্কের জন্য অনেক উপকারী।
- ডিমের হলুদ অংশ বা কুসুম স্বল্পমেয়াদি স্মৃতিশক্তির জন্য খুবই উপকারী।
- সামুদ্রিক মাছ বা যেকোনো ধরনের তেলযুক্ত মাছ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে অনেক ফলপ্রসূ।
- পালং শাক ভিটামিন ই থাকার কারণে মস্তিষ্কের জন্য এটি অনেক ভালো খাবার।
- আখরোট স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে অনেক ভালো ফল দেয়।
এছাড়া স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে গ্রিন টি, টমেটো, কুমড়ার বীজ, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম
নিয়মিত শরীরচর্চা করলে মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে মস্তিষ্কে নতুন কোষের সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট ব্যায়াম আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।
স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়ার কারণ
বিভিন্ন কারণে স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে। নিচে স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। যেসব কারণে স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে:
- অতিরিক্ত রাত জাগলে।
- বয়স বৃদ্ধি পেলে।
- অতিরিক্ত সময় ধরে মোবাইল চালালে।
- অতিরিক্ত মাদক গ্রহণ করলে।
- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে।
- অপুষ্টিজনিত কারণে।
- কোন কারণে মাথায় বড় ধরনের আঘাত লাগলে।
এছাড়া বিভিন্ন কারণে স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে।
বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায়
আমরা বাচ্চাদের মস্তিষ্কের বিকাশ নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকি। শিশুর ছোটকাল থেকে আমরা তাদের বিভিন্ন দিকে নজর রাখলে তারা প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী হতে পারে।
- ছোটকাল থেকে শিশুকে একটু বাড়তি যত্নে রাখতে হবে।
- শিশুর প্রতিদিনের খাবারে এমন কিছু পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে যা তার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
- শিশুদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
- শিশুদেরকে অনেক ছোটকাল থেকে বিভিন্ন উজ্জল রঙিন খেলনা দিতে হবে।
- শিশুদেরকে কোন কাজের জন্য অতিরিক্ত চাপ দেয়া যাবে না। অতিরিক্ত চাপে ফেললে শিশুদের মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির হোমিওপ্যাথিক ঔষধ
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ অনেক ভালো ফল দিতে পারে। অভিজ্ঞ কোন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছ থেকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিলে অনেক মানসিক সমস্যার সমাধান হয়।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া ঔষধ
আপনারা হয়তো সকলে থানকুনি পাতা চিনে থাকবেন। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য থানকুনি পাতা একটি চমৎকার ভেষজ ঔষধ। থানকুনি পাতা তে শুধুমাত্র স্মৃতিশক্তি বাড়ে এমনটি নয়। পেটের যত সমস্যা আছে বিশেষ করে হজমের সমস্যা, রুচিহীনতা, খাদ্য ঠিকভাবে পরিপাক হয় না এসব কিছুর জন্য মহা ঔষধ হিসাবে কাজ করে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় হিসাবে থানকুনি পাতার উপকারিতা
সবচাইতে মজার বিষয় হচ্ছে এই থানকুনি পাতা দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি প্রায় সারা বিশ্বে ক্যাপসুল তৈরি করেছে। এসব ক্যাপসুল অনেক বেশি মূল্য দিয়ে কিনতে হয় । কিন্তু বাংলাদেশ যেহেতু থানকুনি পাতার কোন অভাব নাই এ কারণে আমাদের ক্যাপসুল কেনার কোন প্রয়োজন নেই।
থানকুনি পাতার বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশে ছোটখাটো বন কিংবা বাগানের অভাব নাই এবং প্রায় প্রতিটা বাগানে এই থানকুনি পাতা পাওয়া যায়। আপনি যদি শহরে বসবাস করে তবে এই থানকুনি পাতা সংগ্রহ করতে কষ্ট হতে পারে। তবে আপনি যদি গ্রামে বসবাস করেন তাহলে খুব সহজে আপনার আশেপাশের বাগান থেকে খুব সহজে থানকুনি পাতা সংগ্রহ করতে পারবেন।
দ্রুত ওজন কমানোর উপায় 100% কার্যকারী
তবে যারা শহরে থাকেন তাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। আপনি আপনার বাড়ির ছাদে কিংবা বেলকুনিতে একটি টবে খুব সহজেই কিছু থানকুনি পাতা চাষ করতে পারেন। থানকুনি পাতা আপনি মেডিসিন ছাড়াও তরকারি হিসেবে ভাজি কিংবা রান্না করে খেতে পারেন। তবে ঔষধ হিসেবে খেতে গেলে আপনাকে কিছু পদ্ধতি শিখতে হবে।
থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে থানকুনি পাতা ঔষধ হিসেবে খেতে চাইলে আপনাকে প্রথমে থানকুনি পাতা পিষে কিংবা ব্লেন্ডারের মাধ্যমে রস করে নিতে হবে। থানকুনি পাতার রস আপনি ডোজ হিসাবে প্রতিবার ২০-৩০ মিলি সংগ্রহ করতে হবে। এই রস সঠিক পরিমাণে সংগ্রহ করতে আপনি আপনার বাড়িতে থাকা চা চামচ ব্যবহার করতে পারেন।
১ চা চামচে ৫ মিলি পরিমাণ রস ধরবে। এটা হিসাব করে ৬ চা চামচে 30 মিলি হবে। থানকুনি পাতা আপনি চাইলে প্রতিবার খাওয়ার সময় রস করতে পারেন অথবা একদিন রস করে ফ্রিজে রেখে দুই থেকে তিন দিন খেতে পারেন।
থানকুনি পাতার রস প্রতিদিন সকালে এবং রাতে দুইবার খেতে হবে। এটি আপনি খাওয়ার আগে কিংবা পরেও খেতে পারেন। এভাবে আপনি টানা একমাস থানকুনি পাতার রস খান।
তারপর আপনি আপনার পরিবর্তন সঠিকভাবে বুঝতে পারবেন। একমাস থানকুনি পাতার রস খাওয়ার পর আপনার স্মৃতিশক্তি আগের থেকে ভালো হল কিনা সেটা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
থানকুনি পাতার রস খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়বে এটা ভেবে যদি পরিমাণের থেকে বেশি খান সেটা কিন্তু খারাপের দিকে যেতে পারে। কারণ অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না।
অতিরিক্ত থানকুনি পাতার রস খেলে তার একটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। অতিরিক্ত থানকুনি পাতার রস খেলে আপনার মাথা ঝিমঝিম করতে পারে অথবা মাথা ঘুরতে পারে। এছাড়া বড় কোন সমস্যা নাই।
আপনারা নিয়ম মেনে থানকুনির পাতার রস খেলে অনেকটাই উপকার পাবেন।
আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। আপনারা থানকুনি পাতার রস খান এবং আপনাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করুন।
স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিভিন্ন পরামর্শ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।
1 thought on “স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় | স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির আয়ুর্বেদিক ঔষধ”